ব্লগ্গিং কেন গুরুত্বপূর্ণ : আপনি যেখান থেকেই কিছু রোজগার করতে চান , সেই দুনিয়ায় আপনার কিছু পরিচিতি এবং সার্ভিস থাকা প্রয়োজন । যে সার্ভিস বা প্রোডাক্ট যা মানুষের সামাজিক জীবনধারণের সমস্যা বা প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।
[ সেই সার্ভিস বা প্রোডাক্ট যে সর্বদা ফিজিক্যাল ( যেমন : মোবাইল, ইট , রুটি , কাপড় ) হতে হবে তা না, সেটা ডিজিটাল প্রোডাক্ট ( যেমন -অনলাইন ইনফরমেশন , ফুড মেকিং প্রসেস , শিক্ষামূলক টিউটোরিয়াল ) – ও হতে পারে। ]
সেদিক থেকে দেখতে গেলে ওয়েবসাইট বা ব্লগিং আপনাকে একদিকে দেবে যেমন একটি ভারী পরিচিতি, সাথে সাথেই আপনার সার্ভিস আপনি তুলে ধরতে পারবেন খুব দক্ষতার সাথে পুরো বিশ্বের কাছে ।
ঠিক যেমনটি মহাজাগতিক কাজকর্মের জন্য মহাকাশে বিজ্ঞানীরা স্পেস স্টেশন তৈরি করে থাকনে।
সেভাবেই অনলাইন এ পরিচিতি বা আপনার পরিষেবা বা তথ্য তুলে ধরার জন্য জন্য প্রয়োজন একটি বিশ্বব্যাপী কাঠামো , আর সেই কাঠামোয় হলো ব্লগ বা ওয়েবসাইট।
এই স্পেস স্টেশন এর সাথে যেমন , বিভিন্ন কৃত্তিম উপগ্রহ গুলি যুক্ত থাকে , ঠিক সেভাবেই আপনার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলি যুক্ত থাকবে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর সাথে। ধীরে ধীরে তৈরি হবে আপনার ডিজিটাল সিস্টেম।
আপনার ডিজিটাল সিস্টেম তৈরি হওয়ার সাথে সাথেই , শুরু হবে ডিজিটাল পথ ধরে মানুষের আনাগোনা এবং আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্ট যদি ওই মানুষের জীবনে প্রয়োজনীয় হয় , তখনই শুরু হবে লেনদেন।
এখানে লেনদেন যে শুধুমাত্র একমুখী তা নয় বহুমুখী এবং বিশ্বব্যাপী।
ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে কয় প্রকারের রোজগার হয়।
গুগুল এডসেন্স :
এই গুগুল এডসেন্স হলো গুগল কোম্পানি এর নিজস্ব বিজ্ঞাপন সিস্টেম। এই প্রোগ্রামে আপনি যুক্ত হলে , আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ এ গুগুল বিজ্ঞাপন দেখাবে। সেই বিজ্ঞাপনের টাকার শেয়ার আপনার ব্যাঙ্ক একাউন্ট এ চলে আসবে।
এফিলিয়েট ইনকাম :
এখানে আপনি বিভিন্ন বড় বড় ই কমার্স ( যেমন ফ্লিপকার্ট , আমাজন ) কোম্পানির প্রোডাক্ট এর এফিলিইয়েট লিংক আপনার ওয়েবসাইট / ব্লগ এ দেবেন। সেখান থেকে ক্লিক করে কেউ প্রোডকাট কিনলে , আপনি পেয়ে যাবেন সরাসরি কমিশন। কাস্টমার সরাসরি বা আপনার লিংক থেকে প্রোডাক্ট এর দাম একই পাবে।
ওয়েবসাইট তৈরি :
বিশ্বের ৩০ শতাংশ ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস থেকে তৈরি। তাই আপনি এই ওয়েবসাইট তৈরি ব্যাপারটি তে ভালো ভাবে দক্ষ হয়ে যেতে পারলে, নিজেই অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে দিয়ে , টাকা রোজগার করতে পারেন।
প্রোডাক্ট বিক্রি (ই কমার্স) :
আপনার যদি কোনো ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট থাকে , তাহলে আপনি ই কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে , সেই প্রোডাক্ট সারা বিশ্বে বিক্রি করতে পারেন । এক্ষেত্রে গতানুগতিক যে ক্রয় বিক্রয় পক্রিয়া , তার চাইতে অনেক বেশি প্রোডাক্ট বিক্রি হবে এবং বিভিন্ন রকম বাড়তি খরচ ( বাড়ি ভাড়া , ইলেক্ট্রিক বিল, লেবার চার্র্জ )ইত্যাদি অনেক কমে যাবে। এবং আপনার মুনাফার পরিমান বেশি থাকবে।
সরাসরি বিজ্ঞাপন :
আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ এ যে ধরনের তথ্য থাকবে , সে ধরনের বাস্তবিক প্রোডাক্ট তৈরি করে এমন কোম্পানির সরাসরি বিজ্ঞাপন , আপনি আপনার ব্লগ পোষ্টের সাথে প্রচার করতে পারেন। এটা অবস্যই সে কোম্পানির সাথে কথা বলে । একবার ভাবুন ,যদি আপনি চাকুরীর খবর সম্পর্কিত ব্লগপোস্ট করেন এবং সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ছাত্র বা ছাত্রী আপনার ব্লগে এ তথ্য সংগ্রহ করতে আসে । সেখানে যদি চাকুরী পাওয়ার জন্য প্রশ্ন বা উত্তর সম্পর্কিত কোনো বই এর পোস্ট হয় , সেটা কেনার চান্স্ অনেক বেশি। তাই সে বই কোম্পানি আপনার ব্লগে এ বিজ্ঞাপন দেবে।
ঘুরিয়ে বিজ্ঞাপন :
এটাকে ইংরেজিতে প্রোডাক্ট প্রমোশন ও বলতে পারেন। এখানে আপনি যে সম্পর্কিত ব্লগ পোষ্ট করেন , সেই ধরণের কিছু নুতুন প্রোডাক্ট বা পুরানো প্রোডাক্ট এর বিষয়ে আপনার ব্লগে এ পোষ্ট করার অর্থ ঘুরিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া। যেমন ধারণ আপনি বিভিন্ন মোবাইলের ফিচার্স সম্পর্কে ব্লগ করেন , এখানে যদি যেকোনো একটি কোম্পানি নতুন কিছু প্রোডাক্ট লঞ্চ করে , সেখানে অন্যান্য , বিজ্ঞাপন মিডিয়াম এর চাইতে , আপনার ব্লগে এ বিজ্ঞাপন দেওয়া , কোম্পানির জন্য কম খরচ হবে এবং আপনার জন্য লাভজনক হবে ।
ট্র্যাফিক সুইচ :
একটি প্লাটফর্ম থেকে আর একটি প্লাটফর্ম দর্শক কে নিয়ে যাওয়ায় হলো ট্রাফিক সুইচ। জিনিসটি ঠিক কেমন আপনাদের একটু বোঝানোর চেষ্টা করি।
ধরুন আপনার একটি ইউটুবে চ্যানেল আছে , সেখানে আপনি যা কিছু দেখাচ্ছেন তার একটা লিখিত কপি দিয়ে একটা ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করলেন । এবার দর্শক ওই তথ্যের জন্য গুগল সার্চ করে , আপনার ওয়েবসাইট এ এলো তথ্য জানার জন্য এবং লক্ষ্য করলো , তথ্যের সাথে সাথেই বিষয়টির পদ্ধতিও দেখানো আছে ইউটুবে চ্যানেল এ। সে তখন তথ্য পড়ার পর আপনার ইউটুবে চ্যানেল এ গেলো। এখানে আপনি দ্বিগুন রোজগার করবেন (ওয়েবসাইট এবং ব্লগ ) এবং আপনার উপর দর্শক এর বিশ্বাস যোগ্যতাও বাড়বে ।